হুমায়ুন কবির, ঝিনাইদহ সংবাদদাতা :
নারীও নয় আবার পুরুষও নয়- এধরনের একটি শ্রেণীকে আমরা প্রায়ই রাস্তাঘাটে কিংবা দোকানপাটে বিভিন্নরকম অঙ্গভঙ্গি করে চাঁদা তুলতে দেখি। আমরা যারা সভ্যসমাজের মানুষ, তারা এই অবহেলিত শ্রেণীটিকে ‘হিজড়া’ বলে ডাকি। হিজড়া নারী আর পুরুষের মত নয়, হিজড়াদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হিজড়া শব্দকে তারা অভিশাপ বা গালি হিসেবে মনে করেন। আসলে তারা হচ্ছেন, ট্রানজেন্ডার। প্রকৃতির নিয়তিতেই এরা স্বাভাবিক মানুষের পরিবর্তে হিজড়ায় রূপান্তরিত হয়। ঠিক যেমনটি ঘটে থাকে একজন প্রতিবন্ধীর ক্ষেত্রে। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হলো, প্রতিবন্ধীদের জন্যে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে এবং তাদেরকে সমাজের মূলস্রোতের অন্তর্ভূক্ত করতে নানারকম সরকারি-বেসরকারি আন্দোলন ও পদক্ষেপ দৃষ্টিগোচর হলেও হিজড়াদের কল্যাণে এরকম কোনো কর্মসূচি চোখে পড়ে না আমাদের দেশে। সভ্যসমাজ থেকে একপ্রকার নির্বাসিত এই শ্রেণীটি তাই বিকৃত মানসিকতা নিয়ে গড়ে ওঠে। পেটের তাগিদে জড়িয়ে পড়ে নানারকম অপরাধমূলক কার্যক্রমে। অথচ ‘মানুষ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে এসব হিজড়াদের সামাজিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করতে পারলে তারাও সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।কালীগঞ্জে হিজড়া জনগোষ্ঠীর নেতৃত্ব দেন রত্না হিজড়া। কালিগঞ্জ ও আশপাশের উপজেলাগুলোর হিজড়ারা তাকে গুরুমা বলে ডাকেন।তিনি জানান,বিশ্বময় করণা পরিস্থিতিতে মানুষ যখন মানবতার সেবায় এগিয়ে আসছে তখন এই সমাজের সদস্য হয়েও আমাদের কেউ চোখে দেখেনা, খোঁজ রাখে না। আরাও তো এই সমাজেরই মানুষ। এই সমাজ যদি আমাদেরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য না করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ তৈরি ও সহযোগিতা করত তাহলে আমরাও সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারতাম। লগডাউন থাকায় আমরা খেয়ে না খেয়ে দিন কাটায়।স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিত্তবান লোকেরা অসহায় লোকেদের পাশে দাঁড়ালেও আমাদের দিকে ফিরেও তাকায় নি। শুনেছি হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার)পিপিএম উত্তরণ ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে হিজড়া জনগোষ্ঠীকে বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে থাকেন। কালীগঞ্জে বেদে সম্প্রদায়ের মাঝে উনার উদ্দ্যেগে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও হিজড়া জনগোষ্ঠী ছিল বঞ্চিত। তাই আমার স্যারের নিকট নিবেদন থাকবে, আমাদের কালীগঞ্জের হিজড়া জনগোষ্ঠীকে কিছু সাহায্য সহযোগিতা করার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here