হুমায়ুন কবির সোহাগ, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :
স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের অধীন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ের একটি অফিস আছে। আর এই অফিসের অধীন একটি ৫০ শয্যার হাসপাতাল রয়েছে।উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য বিভাগীয় সকল কার্যক্রম এর মাধ্যমে পরিচালিত হয়।ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় আনুমানিক ৯ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।এই উপজেলার প্রায় ৪ লক্ষ লোকের স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে আসছে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটি। সাবেক কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: শামীমা শিরিন লুবানার দায়িত্ব পালনকালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে ১- ০৯- ২০২১ তারিখ দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ডাক্তার মাজহারুল ইসলাম। তার পূর্বে নিয়মবহির্ভূতভাবে এই পদে ছিলেন ডাক্তার আহসান হাবিব জিকো। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর তিনি তার কর্মস্থল উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র বারোবাজারে যোগদান করেন। বর্তমান আবাসিক মেডিকেল অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে তিনি হাসপাতাল এরিয়ায় তথা উপজেলা শহরেও পরিবার নিয়ে থাকেন না। তিনি থাকেন জেলা শহর ঝিনাইদহ। অফিস সময়ের পরে বহির্বিভাগে জরুরি রোগীর বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের প্রয়োজন হলে কখনো আবাসিক মেডিকেল অফিসার কে পাওয়া যায়নি।রাতে কিংবা সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারেও খোজ করে ডাক্তার মাজাহারুল ইসলামকে পাওয়া যায় নি। ফলে যথাযথ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কালীগঞ্জ উপজেলার রোগীরা।মোহাম্মদ আব্দুস সোবহান আক্ষেপ করে বলেন, গত ২৪ – ৯- ২০২১ তারিখ রাত ১০ টার দিকে বুকের ব্যাথা জনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ইমারজেন্সিতে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার ভালোভাবে না দেখেই তাকে যশোরে নেওয়ার জন্য বলেন। এসময় আবাসিক মেডিকেল অফিসার মাজহারুল ইসালামকে খোজ করেও পাওয়া যায় নি।জানা যায়, ডাক্তার মাজহারুল ইসলাম একজন আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে দৈনন্দিন রুটিন কার্যক্রমও যথাযথভাবে পালন করেন না। নিজের নাইট ডিউটি অন্য ডাক্তারকে দিয়ে করানোর অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আবার কর্মস্থলে রাজনৈতিক ব্যক্তির আত্মীয় পরিচয় দিয়ে প্রভাব সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন।
এ ব্যাপারে ডাক্তার মাজহারুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,আমি ঝিনাইদহ থাকি এটা আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সিভিল সার্জন মহোদয় অবগত আছেন। আবাসিক মেডিকেল অফিসার হওয়া সত্ত্বেও ওয়ার্ক স্টেশনে না থেকে ঝিনাইদহে কেন থাকি এটা আমার থেকেও ভালো সিভিল সার্জন বলতে পারবেন। আপনি ওনার সাথে কথা বলেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডাক্তার অরুণ কুমার দাস জানান,অল্প কিছুদিন হল ডাক্তার মাজহারুল ইসলাম কে আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমার জানা মতে উনি ওয়ার্কস্টেশনে থাকেন।পরিবার জেলায় বসবাস করায় মাঝেমধ্যে আমাকে জানিয়ে ঝিনাইদহেও থাকেন । নিয়ম অনুযায়ী আর এম ও সার্বক্ষণিক ওয়ার্ক স্টেশনে থাকবেন।অভিযোগের বিষয়ে তিনি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন।
সিভিল সার্জন (ঝিনাইদহ) ডাক্তার সেলিনা বেগম জানান,আবাসিক মেডিকেল অফিসার অবশ্যই তার ওয়ার্কস্টেশন এ থাকবেন। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ওয়ার্কস্টেশনে না থেকে ঝিনাইদহ জেলা শহরে থাকেন এ ব্যাপারটা আমাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অবহিত করেননি। ব্যাপারটি আমি খোজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।