নিজস্ব প্রতিবেদক:

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, টিকা এবং গণটিকা নিয়ে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই। তাই অপরিকল্পিত এই গণটিকা কর্মসূচী বুমেরাং হতে পারে।

গণটিকা কর্মসূচীতে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হওয়ায় করোনা আরো ভয়াবহ রূপে ছড়িয়ে পড়তে পারে। অনেক অসুস্থ ও বৃদ্ধ মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে নানা হয়রানির শিকার হয়েও টিকা পায়নি। আবার প্রয়োজন অনুযায়ী টিকা সংগ্রহ করতে না পারলে, গণটিকা কর্মসূচী আবারো মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। এ নিয়ে জনমনে হতাশা বিরাজ করছে।

আজ এক বিবৃতিতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, ৭ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট চলমান গণটিকা কর্মসূচীর আওতায় ৩২ লাখ মানুষকে টিকা দেয়ার কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু, তিন দিনেই লক্ষমাত্রার প্রায় তিন গুন টিকা গ্রহণ করেছেন সাধারণ মানুষ।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণটিকা কেন্দ্রগুলোতে বিশৃঙ্খল পরিবেশ বিরাজ করছে। শারীরিক দূরত্বের বালাই নেই, মাস্ক নেই অনেকের মুখে। অভিযোগ উঠেছে, স্বজনপ্রীতি ও দূর্নীতি হচ্ছে গণটিকা কর্মসূচীতে। অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা উচিৎ।

গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, ৯ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী দেশে মোট টিকা এসেছে ২ কোটি ৫৬ লাখ ৪৪ হাজার ডোজ। গতকাল পর্যন্ত প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ১ কোটি ৪৪ লাখ ৫০ হাজার ৬৩০ জন। ৪৭ লাখ ৩২ হাজার ৮৩২ জন দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে মোট গ্রহণ করেছেন ৯৪ লাখ ৬৫ হাজার ৬৬৪ ডোজ টিকা। অর্থাৎ মোট টিকা প্রয়োগ হয়েছে ২ কোটি ৩৯ লাখ ১৬ হাজার ২৯৪ ডোজ।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, সে হিসেবে সরকারের হাতে টিকা মজুদ থাকার কথা ১৭ লাখ ২৭ হাজার ৭০৬ ডোজ। এতে দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় থাকা ব্যক্তিদের জন্য এখনো ঘাটতি আছে ১ কোটি ২৭ লাখ ২২ হাজার ৯২৪ ডোজ টিকা। প্রতিদিন টিকা প্রয়োগের কার্যক্রম চালু থাকলে দ্বিতীয় ডোজ প্রাপ্তির জন্য অপেক্ষমানদের তালিকা আরো বাড়তে থাকবে, সেই সাথে বাড়বে টিকা ঘাটতির হিসাবও।

বিবৃতিতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, দেশের ১৭ কোটি মানুষের জন্য প্রয়োজন হবে কমপক্ষে ২৭ কোটি ডোজ টিকা। তাই গণটিকা কর্মসূচী চালু রাখতে সরকারকে এখনই বিভিন্ন উৎস থেকে দ্রুত টিকা সংগ্রহ করতে হবে। এখনো দেশে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার উর্ধ্বমুখী, কমার কোনো লক্ষণ নেই। সেক্ষেত্রে মহমারীর এই ভয়াবহতা থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় গণটিকা কর্মসূচী চালিয়ে রাখা।

প্রতিদিন সরকারের মন্ত্রীরা টিকা প্রাপ্তির বিষয়ে আশ্বাসের বাণী শোনাচ্ছেন। কিন্তু টিকা প্রাপ্তি ও টিকাদান কর্মসূচী সম্পর্কে স্বচ্ছ ও সুস্পষ্ট ধারণা জনগণ পাচ্ছে না। তাছাড়া চলমান কর্মসূচীতে অনিশ্চয়তা, বিশৃঙ্খলা ও সমন্বয়হীনতা দৃশ্যমান। সেসব কারণে, সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা দিনদিন বেড়েই চলছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here