নিউজবাংলা ডেস্ক
দেশের মানুষ আওয়ামী দূঃশাসন থেকে মুক্তি চায় কিন্তু সেই দূঃশাসন থেকে মুক্তির সংগ্রামে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে জনগণ তাদের উপর আস্থা রাখতে পারছেনা। ফলে আওয়ামী দূঃশাসন প্রলম্বিত হচ্ছে- এবি পার্টি আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টির তৃতীয় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত শুভেচ্ছা বিনিময় ও চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনকালে বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনেরা বলেন, দেশের মানুষ আওয়ামী দূঃশাসন থেকে মুক্তি চায় কিন্তু সেই দূঃশাসন থেকে মুক্তির সংগ্রামে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে জনগণ তাদের উপর আস্থা রাখতে পারছেনা। ফলে আওয়ামী দূঃশাসন প্রলম্বিত হচ্ছে। সরকারের ব্যর্থতা, দূর্নীতি ও অপশাসনের কারণে রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে বর্তমান সরকার নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এটা দেশকে আবারও পাকিস্তানী শোষনের কালো অধ্যায়ে নিয়ে যাবে। এর জন্য আওয়ামীলীগকে অনিবার্যভাবে বাংলাদেশে মুসলিম লীগের ভাগ্য বরন করতে হবে।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫ টায় বিজয়নগরস্থ এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের ৩য় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে ৪ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করা হয়। এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহবায়ক অ্যাড. তাজুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। এরপর সম্মিলিতভাবে কেক কেটে কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রচিন্তক, রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক প্রফেসর আবুল কাশেম ফজলুল হক।
এসময় শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন গণফোরাম সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মহসীন মন্টু, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী গোলাম সারওয়ার মিলন, সাবেক এমপি মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন, গনঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুলহক নূর, এনডিএম’র সভাপতি ববি হাজ্জাজ, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজিজ উলফাৎ, একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. সুকোমল বড়ুয়া, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গৌতম দাস, পটুয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আব্দুল লতিফ মাসুম, গণফোরাম এর সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. মোজাহেরুল হক, সাবেক বিএনপি নেতা ও বিআরটিসির সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, নৈতিক সমাজের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আমসাআ আমিন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহ আহমদ বাদল, বিএনএম এর কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার সরওয়ার হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মহসীন রশীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সী বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম আরিফ বিল্লাহ, সাবেক জেলা জজ আখতার-উল-আলম, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার ইকতেদার আহমদ, ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা, সর্বজন বিপ্লবী দলের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, বিপিপি’র সভাপতি বাবুল সর্দার চাখারী, নেজামে ইসলাম পার্টির নির্বাহী সভাপতি মাও. একেএম আশরাফুল হক, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মজুমদার, জনতার অধিকার পার্টির চেয়ারম্যান তারেকুল ইসলাম, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিশ, পিপলস গ্রীণ পার্টির চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ খান, গণ সমাজ পার্টির আহ্বায়ক সরদার শামস আল মামুন, জাগপা নেতা আসাদুর রহমান আসাদ, সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্রমূখ।
প্রফেসর আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন- রাজনৈতিক নেতাদের পড়াশোনা করতে হবে, ইতিহাস ঐতিহ্য জানতে হবে। জ্ঞানভিত্তিক রাজনীতি সফল হয়। আদর্শের কথা মুখে না বলে বাস্তবে প্রমাণ দিতে হবে। রাজনীতি এখন অসৎ লোকের হাতে, সত্যিকারের নির্বাচন এখন প্রায় অসম্ভব। পরিবারতন্ত্র রাজতন্ত্র এসবের পরিবর্তন দরকার। বংশানুক্রমিক নেতৃত্ব গনতন্ত্রের বিপক্ষে। দেশ শেখ হাসিনাকেন্দ্রিক হয়ে পড়ায় চরম বিপদে। অন্যান্য বক্তাগণ এবি পার্টির তৃতীয় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে শুভেচ্ছা জানান এবং স্বল্প সময়ে দলের বিস্তৃতি ও অগ্রগতির জন্য এর নেতৃবৃন্দের প্রশংসা করেন। তারা বলেন, অধিকার ভিত্তিক রাজনীতিই হলো আগামী দিনের ঐক্য ও অগ্রগতির সোপান। তারা চলমান রাজনৈতিক ধারার সমলোচনা করে বলেন, শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া এই দুই পরিবারের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ দল এবং দেশের গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। রাজনৈতিক দল গুলোতে দুই বা তিন মেয়াদের বেশী কাউকে দলীয় প্রধান হিসেবে বহাল রাখা অনুচিত। গঠনতান্ত্রিকভাবে দলে এমন বিধান সংযুক্ত করা দরকার যাতে কেউ আমৃত্যু দলীয় প্রধানের পদে আসীন থাকতে না পারে। অসীম মেয়াদে একজন দলের পদ আঁকড়ে থাকলে সেখানে পরিবারতন্ত্র কায়েম হতে বাধ্য। বাংলাদেশে প্রতিহিংসা হানাহানি ও প্রতিশোধপরায়নতার অন্যতম কারণ এই পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি।
২০২০ সালের ২ মে নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে যাত্রা শুরু করে এবি পার্টি। করোনাকালে ঝুঁকি নিয়ে সেবা ও সমস্যা সমাধানের অঙ্গীকারে এবি পার্টির আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। গত তিন বছরে জনদাবী নিয়ে রাজপথে সোচ্চার থেকে দলটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যথেষ্ট সাড়া তৈরী করে। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন প্রকৃয়ায় দলটি প্রাথমিকভাবে নিবন্ধনের জন্য মনোনীত হয়েছে। ৩য় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এবি পার্টি ঘোষিত চার দিনব্যাপী কর্মসূচি তিন কেজি ওজনের ৩ টি কেক কাটার মধ্যদিয়ে উদ্বোধন করা হয়। ৩ ও ৪ মে সারাদেশের জেলা, মহানগর, উপজেলা ও থানা পর্যায়ে আলোচনা সভা ও শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। ৫ মে চতুর্থ দিনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংগঠক সম্মেলন ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কর্মসূচি সমাপ্ত করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here