সুজন বিশ্বাস: ২০২০ সালে বৈশ্বিক জ্ঞানসূচকে বাংলাদেশের অবস্থান একেবারে তলানিতে। ১৩৮টি দেশের মধ্যে ১১২তম। দেশে যে এত এত সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং হচ্ছে, তারপরও জ্ঞানসূচকে এদেশের এমন অবস্থান সত্যিই হতাশার। স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর এসেও জাতির এই হাল মেনে নেওয়া যায় না। খুঁজতে গেলে এর পেছনে বহু কারণ পাওয়া যাবে। তবে এর অন্যতম একটি কারণ আমার মনে হয় জন্মসূত্রেই আমরা মেধাহীন জাতি। আর জাতিকে এমন মেধাহীন করার জন্য দায়ী মহান মুক্তিযুদ্ধের বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড। রাও ফরমান আলীর নেতৃত্বে দেশবিরোধী শত্রুরা দেশের এই যে অপূরণীয় ক্ষতি করে গেছে তা আমাদের আরও বহুদিন ভোগাবে। স্বাধীনতার পর আমরা যখন নতুন একটি দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছি তখন আমরা অনেক মেধাবীকে হারিয়েছি। যাঁরা নিজেদের মেধা আর প্রজ্ঞা দিয়ে জাতিকে অনেকদূর এগিয়ে নিতে পারতেন। স্বাধীনতার পরও অপরাজনীতির বলি হয়ে অনেক মেধাবীকে আমরা হারিয়েছি। জাতির এই ক্ষতি আমরা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি। আমরা আজও একজন জহির রায়হানকে খুঁজে ফিরি। একজন শহিদুল্লা কায়সারকে খুঁজে ফিরি। মুনীর চৌধুরী, আলতাফ মাহমুদ, সেলিনা পারভীন কিংবা ড. জোতির্ময় গুহঠাকুরতার অভাব আমরা আজও পূরণ করতে পারিনি। এই ক্ষতি সহসাই কাটিয়ের ওঠার নয়। এই গুণীজনদের হারানোর ফলেই স্বাধীনতার ৪৯ বছরে এসেও জ্ঞানসূচকে তলানিতেই পড়ে থাকতে হচ্ছে আমাদের। স্বাধীনতার পূর্বে শত বছরের ধারাবাহিকতায় আমরা বহু বুদ্ধিজীবী পেয়েছিলাম। তাঁদের অধিকাংশকেই আমরা মাত্র নয়মাসেই হারিয়ে ফেলেছি। সেইসব শূন্যস্থান পূরণে আর কত প্রতীক্ষার প্রহর গুনতে হবে তা কারো জানা নেই।

 

লেখক: গবেষক ও সাংবাদিক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here