নিউজবাংলা ডেস্ক:

মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা মরিয়ম আক্তার মৌ ছিলেন সংঘবদ্ধ ব্ল্যাকমেইল চক্রের সদস্য তারা উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের পার্টির নামে বাসায় ডেকে মদ ইয়াবা খাইয়ে আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করতেন বলে দাবি করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি

গোয়েন্দারা বলছে, তারা (পিয়াসা মৌ) দিনের বেলায় ঘুমাতেন এবং রাতে এসব কর্মকাণ্ড করতেন। বিশেষ করে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের পার্টির নামে বাসায় ডেকে আনতেন। বাসায় এলে পার্টির সুযোগে তাদের সঙ্গে আপত্তিকর ছবিভিডিও তুলে রাখতেন

রবিবার রাতে রাজধানীর বারিধারায় পিয়াসার বিলাসবহুল বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল মদ, ইয়াবা সিসা সরঞ্জাম জব্দ করা হয় রাত দশটা থেকে শুরু হওয়া অভিযান চলে রাত প্রায় ১২টা পর্যন্ত রাতেই ডিবির আরেকটি দল মোহাম্মদপুরের বাবর রোডের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মডেল মৌ আক্তারকে আটক করে এসময় তার বাড়িতেও মদের বারের সন্ধান পাওয়া যায় সেখান থেকেও জব্দ করা হয় বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ এই ঘটনায় মডেল পিয়াসা এবং মডেল মৌকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়

পরে রাত দেড়টার দিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (উত্তর) শাখার যুগ্মকমিশনার হারুনঅররশীদ

তিনি বলেন, ‘পিয়াসা এবং মৌ সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে আমরা অনেক ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ পেয়েছি। সেসব ঘটনা তদন্ত করতে গিয়েই তাদের বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে দুইজনের বাড়িতেই বিদেশি মদ, ইয়াবা, সিসা পাওয়া যায়। মৌ এর বাড়িতে মদের বার ছিল।

হারুন বলেন, ‘আটক দুই মডেল হচ্ছেন রাতের রানী। তারা দিনের বেলায় ঘুমাতেন এবং রাতে এসব কর্মকাণ্ড করতেন। উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের পার্টির নামে বাসায় ডেকে আনতেন তারা। বাসায় এলে তারা তাদের সঙ্গে আপত্তিকর ছবিভিডিও তুলে রাখতেন। পরবর্তীতে সেসব ভিডিও এবং ছবি ভিক্টিমদের পরিবারকে পাঠাবে বলে ব্ল্যাকমেইল করতেন এবং টাকা হাতিয়ে নিতেন।

আটক দুইজনের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ার বিষয়ে যুগ্মকমিশনার হারুনঅররশীদ বলেন, ‘তাদের বাসায় মাদক পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর গুলশান থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক মামলা হবে। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের অভিযোগ থাকায় আলাদা মামলা হবে। এসব মামলায় আমরা তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করবো।

কে এই পিয়াসা?

দুই বছর আগে পিয়াসা নামটি বেশ আলোচনায় ছিল। দেশের প্রথম সারির জুয়েলার্স প্রতিষ্ঠান আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম তার সাবেক পুত্রবধূর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। তার সেই সাবেক পুত্রবধূর নাম ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা। চাঁদা দাবির অভিযোগে ২০১৯ সালের মার্চ সাবেক পুত্রবধূর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন দিলদার আহমেদ। মামলার পর ঢাকার মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান পিয়াসা। মামলাটি জামিনযোগ্য হওয়ায় তাকে জামিন দেন আদালত

মামলায় দিলদার আহমেদ সেলিম অভিযোগ করেছেন, পিয়াসা দিলদারপুত্র সাফাতকে ফাঁদে ফেলে ২০১৫ সালের জানুয়ারি বিয়ে করেন। পরে তারা জানতে পারেন যে পিয়াসা মাদকাসক্ত এবং উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনে অভ্যস্ত। তাই ২০১৭ সালের মার্চ পিয়াসাকে তালাক দেন সাফাত। এছাড়া রাজধানীর রেইনট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে পিয়াসার স্বামী সাফাতের নাম জড়ায়

এদিকে ২০১৯ সালের ১১ মার্চ দিলদারের বিরুদ্ধেও একটি মামলা করেন পিয়াসা। মামলায় অভিযোগ আনা হয়, দিলদার আহমেদ পিয়াসাকে গর্ভপাতের চেষ্টা, নির্যাতন, হত্যার হুমকি দিয়েছেন। তবে সে বছরের ১৭ জুলাই পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো. মজিবুর রহমান আদালতে দেয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, পিয়াসার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here