নিউজবাংলা ডেস্ক

মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরে টহল দিচ্ছে সাঁজোয়া যান। আবারো বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে ইন্টারনেট সংযোগ। রাতে তল্লাশি করা হচ্ছে বাড়ি বাড়ি। গ্রেপ্তার করা হচ্ছে সাধারণ লোকজনকে। এ অবস্থাকে জনগণের বিরুদ্ধে জেনারেলদের যুদ্ধ ঘোষণা বলে অভিহিত করেছেন জাতিসংঘের স্পেশ্যাল র‌্যাপোর্টিউ টম অ্যানড্রু। তিনি এক টুইটে লিখেছেন-গভীর রাতে বিভিন্ন বাড়িঘরে তল্লাশি করা হচ্ছে। গ্রেফতারের সংখ্যা বাড়ছে । কেড়ে নেয়া হচ্ছে অধিক থেকে অধিক পরিমাণ অধিকার ।

বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে আবারও ইন্টারনেট সংযোগ । সাধারণ লোকালয়ে প্রবেশ করছে সেনা সাঁজোয়া যান । এসবই ইঙ্গিত দিচ্ছে তারা কতটা মরিয়া হয়ে উঠেছে। তবে তিনি এই টুইটে মিয়ানমারের জেনারেলদের প্রতি সর্তকতা উচ্চারণ করেছেন। লিখেছেন- আপনাদেরকে ও জবাবদিহিতার আওতায় আসতে হবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি । পহেলা ফেব্রুয়ারি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ।এরপর সেখানে জারি করে এক বছরের জরুরি অবস্থা। তারপর থেকে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের অকাতরে গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করেছে।অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে প্রতিদিনই বাড়ছে বিক্ষুব্ধ মানুষের সংখ্যা। বিভিন্‌ন শ্রেণি পেশার মানুষ যোগ দিচ্ছে তাতে। তারা গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে এবং অংসান সুচি ও বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে ।এই বিক্ষোভ দমনে সেনাবাহিনী প্রথম দিকে নীরব থাকলেও পরবর্তীতে তারা তীব্র দমন-পীড়ন শুরু করেছে। তারই অংশ হিসেবে গত রাত একটার সময় আবারো ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে । উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ কাচিনে নিরাপত্তা রক্ষাকারীবাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি ছুড়েছে । এ অবস্থাকে জাতিসংঘের কর্মকর্তা টম অ্যানড্রু জনতার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর যুদ্ধ বলে অভিহিত করেছেন । ওদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র এবং বৃটেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রতি বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

নবম দিনের মতো আজও সেখানে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে কাচিন রাজ্যের মিতকিনা শহরে গুলির শব্দ শোনা গেছে। সেখানে অভ্যুত্থান বিরোধীদের সাথে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। তবে এই সংঘর্ষে রাবার বুলেট নাকি সরাসরি গুলি করা হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে পাঁচ জন সাংবাদিককে। অভ্যুত্থানের পর প্রথমবারের মতো ইয়াঙ্গুনের রাজপথে দেখা গেছে সাঁজোয়া যান। সেখানে বিক্ষোভ করছিলেন বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং ইঞ্জিনিয়ারদের একটি দল। মিয়ানমারের টেলিকম অপারেটররা বলেছেন রাত একটা থেকে সকাল নয়টা পর্যন্ত ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে ।রাজধানীর একটি হাসপাতালে এক ডাক্তার বিবিসিকে বলেছেন নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী এখন বাড়ি বাড়ি রাতের বেলা তল্লাশি চালাচ্ছে। আগের দিন তারা বিভিন্ন বাড়িতে প্রবেশ করেছে । সেসব বাড়ির সীমানা দেয়াল ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেছে এবং বেআইনিভাবে লোকজনকে আটক করেছে । যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের কারফিউ চলাকালীন ঘরের ভিতরে অবস্থান করার জন্য সতর্ক করেছে ইয়াঙ্গুনে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here