কামাল ইয়াসীন, রাজশাহী
রাজশাহীতে ড্রাম চিমনি দিয়ে ইটভাটা তৈরি করে প্রকাশ্যে কাঠখড়ি পুড়িয়ে ফসলি জমিতে ইট তৈরি করছেন ভাটা মালিকেরা। ইটভাটার মালিকরা মানছেনা ইট তৈরি ও ভাটা স্থাপন আইন। নিজেদের ইচ্ছেমতো আবাসিক, কৃষিজমি ও পরিবেশ স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে ইটভাটা স্থাপন করেছে।
ভাটার ধূলা, কালো ধোঁয়া ও আগুনের তাপে ধ্বংস হচ্ছে নিকটবর্তী এলাকার ফসল, বনজসম্পদ ও ফলদ গাছ। এ সকল ইটভাটার কোন প্রকার অনুমোদন নেই। নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র কিংবা কৃষি বিভাগের প্রত্যয়নপত্র। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মোহনপুর উপজেলার ঘাসি গ্রাম ইউনিয়নের ঘাসি গ্রাম হিন্দুপাড়া সংখ্যালঘুদের বাড়ী ঘেঁষে ড্রাম চিমনি ব্যবহার করে অবৈধ ভাটা স্থাপন করে কাঠ পুড়িয়ে ইট তৈরি করছেন ‘২০২১ ব্রিক্স’এর স্বত্বাধিকারী একরামুল হক। অন্যদিকে একই ইউনিয়নের বেলনা বড়াইলে আমবাগান, ঝালপুকুর আদিবাসীপাড়া এবং ঈদগাহসংলগ্ন বারো মাস ফসলি জমিতে ড্রাম চিমনি দিয়ে ইটভাটা স্থাপন করে কাঠ পুড়িয়ে ইট তৈরি করছেন ‘এডি ২১ ব্রিক্স’এর স্বত্তাধিকারী আলহাজ¦ পরিচয় দানকারী আজিজুল হক। ওই ভাটা দুটিতে ন্যূনতম আইন মানা হয় না।

রবিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ইট ভাটা দুটোর চারপাশে শতশত মণ কাঠ সাজানো। গাড়িতে করে গাছ কেটে এনে কাঠ পরিমাপ করা হচ্ছে প্রকাশ্যে ভাটার সামনে। দেদারছে কাঠ পুড়ছে ভাটায়। এক টুকরো কয়লার অস্থিত্ব ভাটার কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ভাটার কথা বলতে গেলে, কার ছাড়পত্রের দরকার আছে ? এমন মন্তব্য করে দাম্ভিকতার সঙ্গে বলেন ভাটার মালিক পরিচয়দানকারী আজিজুল হক। তিনি জানান, ‘দেশে কত কিছু অবৈধ, আমি তো ইটের ভাটা চালাচ্ছি। তাছাড়া বিজয় দিবসসহ বিভিন্ন দিবসে চাঁদা হিসেবে উপজেলাসহ অন্যানদের ম্যানেজ করে ইট ভাটা চালাতে হয়। চলতি মৌসুমে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমার ভাটা থেকে ইট চেয়েছেন’। এলাকাবাসীরা জানান, অজ্ঞাত কারো অবৈধ সহায়তায় ঘাসি গ্রাম ইউনিয়নের এই ইট ভাটা দুটি ফসলী জমি এবং বাড়ি ঘেঁষে স্থাপন করা হয়েছে। অহরহ কাঠখড়ি কিনে ভাটায় আনা হচ্ছে। উজার হচ্ছে এলাকার গাছপালা। পরিবেশ হচ্ছে বিপন্ন। হ্রাস পেয়েছে ফসলি জমি।
ওই ভাটা দুটো ছাড়াও উপজেলার অন্যান্য ভাটা চিমনি আইন মেনে চললেও তা সরকারি বিধি অনুযায়ি পরিচালিত হচ্ছেনা। এ বিষয়ে উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি আশরাফুল আলম এর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ড্রামচিমনির ব্যবহার ও কাঠ পুড়িয়ে ইটভাটা স্থাপন করা যাবেনা মর্মে ভাটা মালিক আজিজুল এবং একরামুল হককে অনেক আগেই জানানো হয়েছে। তারপরেও তারা অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা কলে আসছে। মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানওয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here