নিউজ বাংলা ডেস্ক:

সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম দিনেই সংসদ অধিবেশনে সংস্কৃতি অঙ্গনের সংকট তুলে ধরলেন নন্দিত অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা।

সংসদে দাঁড়িয়ে প্রথম দিনেই ছোটপর্দা ও বড়পর্দার সংকটগুলো তুলে ধরলেন নন্দিত অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা। সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবে তিনি তার বক্তব্য প্রদান করেন।

“বাংলাদেশে শিল্পী কোনো স্বীকৃত পেশা নয়”-এমন আক্ষেপের কথা জানিয়ে সুবর্ণা মুস্তাফা বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের দেশের মঞ্চ চর্চাকে, থিয়েটারকে এইন্টারটেইনমেন্ট টাস্ক ফ্রি করে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, এরা নিজেদের পকেটের টাকা বের করে থিয়েটার করছে, এরা ট্যাক্স দিবে কীভাবে? সেই আইনটি এখনো বিরাজমান, আমরা এখনো সেই সুবিধা ভোগ করছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বেইলি রোডে মহিলা সমিতিতে নাটক দেখেছেন।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভাই শেখ কামাল অভিনয় করতেন মঞ্চে। আন্ত-বিশ্ববিদ্যালয় নাটক প্রতিযোগীতাতে উনি প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। এতো কিছুর পরেও শিল্পী বাংলাদেশে কোনো স্বীকৃত পেশা নয়। আমরা চাইলে সামান্য একটা ব্যংক লোনও নিতে পারি না। বিষয়টা অত্যান্ত বিব্রতকর।”

সংসদ সদস্য নির্বাচিত করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সুবর্ণা মুস্তাফা তার বক্তব্যে তুলে ধরেন দেশিয় চলচ্চিত্রের সংকটগুলোও। দাবি জানান, ৬৪ জেলায় সিনেপ্লেক্স স্থাপনসহ বিদ্যমান সিনেমাহলগুলোর সংস্কার, ও চলচ্চিত্রের ওপর সাময়িক কর প্রত্যাহারের।

তিনি বলেন, “আমাদের সংস্কৃতির একটি অংশ চলচ্চিত্র। দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের চলচ্চিত্র খুব দুঃসময়ের মধ্যে যাচ্ছে। দেশীয় চলচ্চিত্রের সুদিন ফিরিয়ে আনতে দ্রুত ৬৪ জেলায় সিনেপ্লেক্স, সিনেমা হলগুলোর পরিবেশ বদলাতে হবে, সেগুলো ডিজিটাল করতে হবে।”

আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানাই, চলচ্চিত্রের এই দুর্দিনে আপাতত বাংলা চলচ্চিত্রের কর মুক্ত করে দিতে। একই সঙ্গে আমার আবেদন বাংলা চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ক্ষেত্রে সিনেমা হলগুলোকে ইউটিলিটি বিল মুক্ত করে প্রয়োজনে আরও কিছু প্রণোদনা দেওয়া হোক।”

‘যেসব বিদেশি চলচ্চিত্র আমাদের হলে প্রদর্শিত হচ্ছে সেগুলোর কর বাড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে।’-যোগ করেন সুবর্ণা।

টিভি নাটকের অসংখ্য জনপ্রিয় নাটকের অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা। সেই টেলিভিশনেই চলছে দর্শক খরা। চ্যানেলের বর্তমান দুর্দশা সম্পর্কেও বক্তব্য রাখেন এ শিল্পী। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে সুবর্ণা বলেন, “এত টেলিভিশন চ্যানেল আমাদের কিন্ত ডিজিটাল ডিস্ট্রিবিউশনের অভাবে দেশীয় চ্যানেল দর্শক হারাচ্ছে। লাগামহীন বিজ্ঞাপন এবং অব্যবস্থার অবসান দরকার। একই সঙ্গে ডাবিং করা বিদেশি সিরিয়াল যেন সপ্তাহে একটা নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট সময়ে প্রচার করা হয় সেটা নজর রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ টেলিভিশন তাদের রোল মডেল হতে পারে।

মঞ্চ ও বেতারকে সারাদেশে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা জরুরি।” নির্মলেন্দু গুণের রচিত ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো’ কবিতাটি আবৃত্তির মাধ্যমে নিজের বক্তব্য শেষ করেন সুবর্ণা।

প্রসঙ্গত, ২০ ফেব্রুয়ারি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন সুবর্ণা মুস্তাফা। চলতি বছর অভিনয়শিল্পে বিশেষ অবদান রাখায় তাকে একুশে পদকেও ভূষিত করে বর্তমান সরকার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here