নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র ১৩ দিন বাকি। প্রতীক বরাদ্দের পর সারা দেশে চলছে প্রচার-প্রচারণা। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা সরকারি সুবিধা নিয়ে প্রচারণার মাঠে থাকলেও প্রচার চালাতে পারছেন না বিএনপি-জামায়াতসহ ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা প্রচারণার জন্য বের হলে হামলার শিকার হচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের হাতে।


গতকাল শনিবার গণসংযোগ চালানোর সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ৩০-৪০ যুবক এ হামলা চালায়। 

পরে দুপুরে মির্জা আব্বাস বলেন, আমাদের নিয়মতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রমে আওয়ামী লীগ এভাবে সহিংস আক্রমণ চালাবে আমি ভাবতেও পারিনি। নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রমে হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগ আমাদের নেতাকর্মীদের বেধড়ক মারধর করে আহত করে। অন্য দিকে, এই আহত নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে পুলিশ।

মির্জা আব্বাস বলেন, এই হচ্ছে আজকে সারা বাংলাদেশের পরিস্থিতি। সরকার বলছে, বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবে কি না, আসলে আমাদের শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে রাখবে কি না সেটাই প্রশ্ন। আমরা নির্বাচন করতে পারব কি না এ বিষয়ে দেশের জনগণের মধ্যে সন্দেহ রয়েছে।

আমি সাংবাদিক বন্ধুদের মাধ্যমে জানতে চাই, আসলে সরকার কী চায়? বিএনপিকে নির্বাচন করতে আদৌ দেবে কি দেবে না, এ বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত স্পষ্ট হওয়া উচিত। তফসিল ঘোষণার সময় সরকার বলেছিল, বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে নতুন কোনো মামলা হবে না। এ ছাড়া, পুরাতন মামলায় গ্রেফতার করা হবে না। এই বক্তব্যের সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। 

প্রতিদিন নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, নতুন নতুন গায়েবি মামলা দেয়া হচ্ছে। আমরা নির্বাচনে থাকতে চাই বলেই সরকারের এই আক্রোশ।

মির্জা আব্বাস আরো বলেন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। পালানোর সুযোগ আমাদের নেই। আজ আমার ওপর হামলা হয়েছেন। কিন্তু হামলা মামলা যতই হোক নির্বাচনের মাঠ আমরা ছাড়ব না।

শুক্রবার রাতে সিরাজগঞ্জ শহরে পুলিশের গুলি ও লাঠিচার্জে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সিরাজগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী রুমানা মাহমুদসহ অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ সময় রুমানা মাহমুদের পিঠে, পায়ে ও হাতে গুলির স্প্রিন্টার লেগেছে। এ ছাড়া, গুলিতে শহর মহিলা দলের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মেরিনার দু’চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। 

বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, অনেকে পুলিশের রাবার বুলেট ও টিয়ার শেলের আঘাতে আহত হয়েছেন। শহরের কলেজ রোড ও বিএনপি কার্যালয়ের সামনে মাগরিবের নামাজের পর এ ঘটনা ঘটে।

এছাড়া গতকাল নোয়াখালীতে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বিএনপি প্রার্থী  মাহাবুব উদ্দিন খোকনসহ অনেকে।  

হামলাকারীদের আক্রমণ ছাড়াও পুলিশের হাতে প্রতিদিনই গ্রেফতার হতে হচ্ছে দলের নেতাকর্মীদের । গ্রেফতারের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না সংসদ সদস্য প্রার্থীরা। প্রার্থীদের লক্ষ্য করে গুলির ঘটনাও ঘটছে। নির্বাচন কমিশনে এসে প্রতিদিনই এসব অভিযোগ করছেন তারা। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেন, আমি মনে করি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়েছে। কারণ, প্রার্থীরা তাদের প্রচারণা চালাতে পারেন। তাদের কাজে কোনো বাধা নেই। স্থানীয়ভাবে কোনো ফৌজদারি অপরাধ ঘটলে সেগুলো তারা আমাদের কাছে পাঠালে তদন্ত করা হবে।

দেশের বিভিন্নস্থানে হামলার ঘটনায় কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, দু-একদিনের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইজিপির কাছে চিঠি দেব। প্রার্থী এবং রাজনীতির সাথে জড়িতদের বিনা অপরাধে বা ফৌজদারি অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত না থাকলে যেন গ্রেফতার না করে। অহেতুক হয়রানি কেন হচ্ছে সে সম্পর্কে কিছু বলতে পারব না। তাদের বিরুদ্ধে হয়তো ফৌজদারি মামলা ছিল আগে থেকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here