নিজস্ব প্রতিবেদকঃ এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণরে দাবিতে ১০ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে  জাতীয় প্রেস ক্লাবের  সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-র্কমচারী জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোট । ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সাগর-রুনি  মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে ।

সংবাদ সম্মেলনে মহাজোটের আহবায়ক ও বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী ফোরামের সভাপতি  অধ্যক্ষ মো.মাঈন উদ্দিন বলেন, “স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেলেও বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারিগণ পূর্ণাঙ্গ সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

পাঠ্যক্রম, সিলেবাস, আইন এবং একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালিত হলেও শিক্ষা ব্যবস্থায়  সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারিগণের সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিরাট পার্থক্য বিরাজমান।  বৈষম্য গুলো হলো –উৎসব ভাতা, বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, পদোন্নতি না থাকা, সন্তানের শিক্ষা ভাতা, হাউজ লোন, বদলি প্রথা,  চাকরি শেষে নেই পেনশনের সুযোগ সুবিধা ।

অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্ট্রে শিক্ষক-কর্মচারিগণের নিকট থেকে প্রতি মাসে বেতনের ১০% করে কেটে রাখলেও বৃদ্ধ বয়সে যথাসময়ে  এ টাকা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা নেই । অনেক শিক্ষক-কর্মচারী টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যান ।  অধিকাংশ শিক্ষক নিজ জেলার বাইরে চাকরি করেন তাদের জন্য বদলী ব্যবস্থা চালু অতীব জরুরি ।

অধ্যক্ষ থেকে কর্মচারী পর্যন্ত নামমাত্র ১০০০ টাকা বাড়িভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান ।  বিশ্বের কোনো দেশে শিক্ষা ব্যবস্থায় এমন বৈষম্য আছে বলে মনে হয় না।  এই বৈষম্য দূরীকরণে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ জরুরি।”  তিনি আরও জানান, “শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক আয় থেকেই কোনো ভর্তুকি ব্যতীরেকেই জাতীয়করণ সম্ভব।”

সংবাদ সম্মেলনে মহাজোটের সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন আহমেদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, “১৯৭৩ সালের মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকার বাজেটে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান  ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়রকরণ করেন, বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক-কর্মচারিগণের  বেতন ৫০ টাকা থেকে ৭৫ টাকায় এবং বেসরকারি কলেজের বেতন ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায় উন্নীত করেন।

তাছাড়া প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের রেশনিং এর ব্যবস্থাও করেন।  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ধারাবাহিকতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাও ২০১৩ সালে ২৬ হাজার ১ শত এর বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেন।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ এর আওতায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত করেছেন,  যার জন্য আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

তাছাড়া ২০১৮ সালের ১০ জানুয়ারি ফোরামসহ ৫টি বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী জোটের সমন্বয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে  সংঘঠিত ২০ দিনের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারিগণের বার্ষিক ৫% প্রবৃদ্ধিসহ মাসিক বেতন এবং বার্ষিক ২০% বৈশাখী ভাতার ব্যবস্থা করেছেন।

বর্তমানে ৫ লক্ষ কোটি টাকার অধিক অর্থের বাজেটে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ না হওয়ায় বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও অমানবিক। মহাজোটের নেতৃবৃন্দ মনে করেন, সরকার বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীকে এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য  মুজিব শতবর্ষই এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের মাহেন্দ্রক্ষণ।  বঙ্গবন্ধুর বর্তমান জন্ম শতবার্ষিকীতে আমরা যারা বর্তমানে বেঁচে আছি তারা পরবর্তী জন্ম শত বার্ষিকীতে হয়তো কেউই আর  বেঁচে থাকবোনা।

বিশেষ করে বর্তমান সরকারের একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই পারে এমপিওভুক্ত শিক্ষাকে জাতীয়করণ ঘোষণা দিতে।  মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের ঘোষণা না আসলে ১০ জানুয়ারি ২০২২ খ্রি. রোজ সোমবার বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে ধানমন্ডি ৩২  নম্বর এ  বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারিগণ অবস্থান কর্মসুচি পালন করবে।”

সংবাদ সম্মেলনে মহাজোটভুক্ত সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here