সেলিম শাহারীয়ার: ১৯৫২ মহান ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ নির্বাচন, ১৯৬২ শিক্ষা আন্দোলন ১৯৬৬ পূর্ব-পাকিস্থানে স্বায়ত্তশাসনের দাবি ১৯৬৮-৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থান , ১৯৭০ এর নির্বাচন এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিরাট বিজয়ের পর ১৯৭১ সালে শেখ মুজিবার রহমানের নির্দেশে শুরু হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ। এবারের সংগ্রাম মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম.. এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম… জয় বাংলা !! পদ্ম-মেঘনা-যমুনা তোমার আমার ঠিকানা.. এসব শ্লোগান ছিলো মানুষের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের এ যুদ্ধে সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের অংশ গ্রহণ বাংলার ইতিহাসে এক জ্বলন্ত অনির্বান স্বরুপ।

বাংলাদেশের এই স্বাধীনতা আন্দোলনে সশস্ত্র যুদ্ধ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্যে কয়েকটি সেক্টরে দেশকে ভাগ করা হয়েছিল। তারমধ্যে সাতক্ষীরা জেলা ছিল ৮ম ও ৯ম সেক্টরের অধীন। পরবর্তীতে গড়ে ওঠা ৯ম আর ৮ম সেক্টরের সাতক্ষীরার ভোমরা ছিল প্রথম ক্যা¤প। এখানেই সাতক্ষীরা জেলার মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্ন থেকে একটি প্রশিক্ষণ ক্যা¤প গড়ে উঠেছিল স্থানীয় জনসাধারণ আর তৎকালীন ই.পি.আর ও পুলিশ বাহিনীর সহযোগিতায়। এই সেক্টরের দায়িত্ব প্রাপ্ত সেকটর কমান্ডার হলেন – ১. মেজর এম.এ জলিল, ২. মেজর জয়নুল আবেদিন,৩. আবু ওসমান চৌধুরী, ৪. মেজর এম.এ মনজুর। এছাড়া সুষ্ঠুভাবে যুদ্ধ পরিচালনার স্বার্থে মুক্তযুদ্ধ চলাকালীন ৯ম সেক্টরে বেশ কয়েকজন সাব-সেক্টর কমান্ডার নিয়োগ করা হয়, তাঁরা হলেন : ১.ক্যাপ্টেন শফিকুল্লা, ২. ক্যাপ্টেন মাহবুব আহমেদ, ৩. মোহাম্মদ শাহজাহান (ক্যাপ্টেন শাহজাহান মাস্টার নামে খ্যাত), ৪. ক্যাপ্টেন এম.এন হুদা, ৫. ক্যাপ্টেন জিয়াউদ্দিন, ৬. লে. মাহফুজ আলম বেগ, ৭. লে. সামসুল আরেফিন সেক্টর কমান্ডারদের সাথে সাতক্ষীরা জেলার মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসাবে অনেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন আব্দুল গফুর এম এন এ, ক্যাপ্টেন শাহজাহান মাষ্টার, মমতাজউদ্দিন এম পি, কলারোয়ার শেখ আমানুল্লাহ, স ম আলাউদ্দিন, এ এফ এম এন্তাজ আলী, সৈয়দ কামাল বখত সাকী এমপি, শ্যামনগরের এস এম ফজলুল হক, কালিগঞ্জের শেখ ওয়াহিদুজ্জামান, বাবর আলী, আতিয়ার রহমান, আব্দুল হাকিম, বরিশালের নূরুল ইসলাম ম›জু, লুতফর রহমান, আব্দুল মজিদ, কাজী কামাল ছট্টু, মীর এশরাক আলী, মোস্তাফিজুর রহমান, আজিবর রহমান, কামরুল ইসলাম খান, খায়রুল বাশার, এনামুল হক প্রমুখ (নাম না জানা অসংখ্য মানুষ মুক্তিযুদ্ধের জন্য নিজেদেরকে নিয়োজিত রেখেছিলো তাদের প্রতি মিন¤্র শ্রোদ্ধা)। ১৯৭১ সালের ঢাকার ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতা ও মুক্তির ডাক দিলে সারা বাংলা অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। শান্ত সুশীতল কালিগঞ্জও সেই বিপ্লবে উত্তাল হয়ে ওঠে। সংগ্রামকে সুসংগঠিত করতে তৈরি করা হয়েছিল ২৩ সদস্য বিশিষ্ঠ কালিগঞ্জ সংগ্রাম পরিষদ।সংগ্রাম পরিষদের সদস্যরা দিন রাতের কর্ম তৎপরতায় মুহুর্তে কালিগঞ্জের রাজনৈতিক চিত্র পাল্টে দেয়। সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে একাত্তরের ৮ মার্চ কালিগঞ্জের ডাকবাংলা চত্বরে পুড়িয়ে ফেলা হয় পাকিস্তানের পতাকা। এ সময় জ্বালাময়ী শ্লোগান দিয়ে লাঠি মিছিলও হয়েছিল কালিগঞ্জ থানা সদরে। কালিগঞ্জের মানুষ সংঘবদ্ধ হয় এবং মুক্তি বাহিনীর নেতৃত্বে প্রতিরোধ ব্যুহ রচনা করেন। ১০ ও ১১ এপ্রিলের দিকে রটে যায় পাক সেনারা নদী পথে (কাঁকশিয়ালী নদী) হয়ে কালিগঞ্জের দিকে এগিয়ে আসছে। এ খবর শুনে ক্রোধে ও উত্তেজনায় কাঁপতে থাকে সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দ।দ্রæত এলাকার সমস্ত বন্দুকধারীদের সংগঠিত করে কালিগঞ্জ বাজার থেকে থানা পর্যন্ত নদীর তীরে গেওয়া বাগানের ঝোঁপের মধ্যে পজিশন নেয় বন্দুকধারীরা। সব বাধা-বিপত্তি মায়া কাটিয়ে মে মাসের মধ্যে শত শত ছেলে দেশ মুক্তির শপথ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে চলে যায়। কৃষক-শ্রমিক,ছাত্র-শিক্ষক সবাই মুক্তিযুদ্ধের জন্য নিজেদের কে উৎসর্গ করে দেশ মাতৃকার সেবায়। যুব সম্প্রদয় ও ছাত্রদের ভূমিকাছিলো চেখে পড়ার মত তারা মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য খরো¯্রােতা ইসামতি নদী সাঁতরে মুক্তিযোদ্ধাদের হিঙ্গেলগঞ্জ ক্যাম্পে যোগ দেয় এদের মধ্যে ক্যাপ্টেন ক্যাপ্টেন শাহজাহান মাষ্টারের অনুপ্রেরণায় তারালীর শেখ শাহাবুদ্দীন, আব্দুল খালেক, ইসমাইল, কালিগঞ্জের বারেক, নলতার গোলামসহ অনেক ছাত্ররা ছিলেন তারা নিজেদেরকে দক্ষ যোদ্ধা হিসাবে তৈরী করতে বিহার মুক্তিযুদ্ধ ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিতে থাকেন। কালিগঞ্জ উপজেলার শতাধিক ছাত্র ও মুক্তিযোদ্ধারা ভারতে বিহারসহ সীমান্ত এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ দিতে থাকেন (মিত্র সেনারা) ভারতের শিখ সেনারা এই প্রশিক্ষনের প্রশিক্ষক ছিলেন তাদের হিন্দি ভাষা বাঙ্গালী মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলায় বুঝানের জন্য ছাত্ররাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলো যেমন বিহারের চাকুলিয়া মুক্তিযুদ্ধা ক্যাম্পের ৭ নং ইনিঞ্চ ক্যাপ্টেন শাহজাহান মাষ্টারের ছাত্র তারালীর শেখ শাহাবুদ্দীন অন্যতম পরবর্তীতে তিনি ওই গ্রæপের প্রশিক্ষক নিযুক্ত হয়েছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তিযুদ্ধে যাওয়া ও দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে পাকিস্থান পন্থী এদেশের দোষররা পিচ কমিটি, রাজাকার আল-বদরসহ বিভিন্ন কমিটি তৈরী করে। পাশাপাশি নিরীহ বাঙ্গালীকে পাকিস্থান প্রীতি করার লক্ষে নির্যাতন করার জন্য পাক আর্মি ঘাঁটি গাড়ে ওয়াপদা ডাক বাংলা ভবন, বসন্তপুর চন্দ্রদেবের পরিত্যাক্ত বাড়ি, কালিগঞ্জ হাসপাতালের সংলগ্ম এলাকা, দমদম ফেরি ঘাটের বরফকল এবং খানজিয়া ইপিআর ক্যা¤পসহ নানা স্থানে গড়ে তোলে। দ্রæত তাদের পরিধি আরো বিস্তৃৃত হয় সাদপুর ব্রীজ, ভাড়াশিমলা, সুইলপুর, খানজিয়া, নাজিমগঞ্জ, বসন্তপুর, উকসা ও পিরোজপুরে। মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিশোধ ¯পৃহায় দ্রæত আর্মস ট্রেনিং নিতে থাকেন ভারতের হিঙ্গলগঞ্জে,বিহার,তকিপুর, টাকিসহ নানা স্থানে। মে মাসের মধ্যে ট্রেনিং শেষে তারা ফিরে আসে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশের মাটিতে দীর্ঘদিনের স্বপ্ন দেশ স্বাধীনতার জন্য। ৯নং সেক্টরের অধিনায়ক মেজর জলিল এবং তার সহযোগি ক্যাপ্টেন নূরুল হুদা, লে. বেগ, লে. আরেফিন ও লে. শচীন দের নেতৃত্বে জুন থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন সময়ে নিজ বাসভ‚মির উপর অসংখ্য আক্রমন পরিচালনা করে। পাক সেনারা কালিগঞ্জ দখলে রাখতে বিভিন্ন ক্যাম্পে শ’দুয়েক নিয়মিত সৈন্য, শ’খানেক রাজাকার, পিচ কমিটির কিছু ইনফরমার নিয়োগ করে। তাদের অত্যাধুনিক অস্ত্র শস্ত্রের বিরুদ্ধে শ’পাঁচেক মুক্তিযোদ্ধা নিন্মমানের অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে মনোবলকে সম্বল করে এক অসম যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। প্রথমে তারা বসন্তপুর বিওপি, খানজিয়া ক্যা¤প ও কালিগঞ্জ থানা সদরের বিওপি ক্যা¤েপর উপর আক্রমন শুরুকরে। পরে তারা বাগবাটি, পিরোজপুর, ভাড়াশিমলা, রতনপুর, নজিমগঞ্জ, দুদলীসহ বিভিন্ন পাক ঘাঁটিতে বারবার চোরাগুপ্তা আক্রমন করে পাক বাহিনীকে পর্যুদস্ত করে ফেলে। মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে অক্টোবর ও নভেম্বরে কালিগঞ্জ একটা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আক্রমন পাল্টা আক্রমন আর রাইফেল, মেশিনগান, গ্রেনেড, রকেট লাঞ্চারের শব্দে ও আগুনে কালিগঞ্জের আকাশ, বাতাস, মাটি, প্রক¤িপত হতে থাকে। উকসা বিওপি আক্রমন এবং পিরোজপুর ও খানজিয়ার সম্মুখ সমর মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম উল্লেযোগ্য ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে কালিগঞ্জের আপামর জনসাধারণ পাকিস্থানী নরপশুদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। যে যেভাবে পারে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। কালিগঞ্জ উপজেলায় মহান মুক্তিযুদ্ধের দিন পঞ্জিতে গৌরবময় কিছু স্মৃতি আজও সমুজ্জ্বল যেমন –
১৩ জুন ১৯৭১ : সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন নূরুল হুদার নেতৃত্বে ৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধা বসন্তপুর পাকসেনা ক্যা¤প আক্রমণ করলে যুদ্ধ হয় । যুদ্ধে ২০ জন পাকসেনা মারা পড়ে এবং বহু অস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের করায়ত্ত হয় ।
জুলাই ২য় সপ্তাহ ১৯৭১ : মেজার জলিলের নির্দেশক্রমে ক্যাপ্টেন নূরুল হুদা ১৬০ জন সদস্য নিয়ে খানজিয়া বিওপি ক্যা¤েপর দখল নিতে পাকসেনাদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচন্ড যুদ্ধ হয় । ৩০ মিনিটের এই প্রচন্ড যুদ্ধে পাক সেনাদের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। পাকসেনারা পরাজিত হয়ে পালায় তারা সাতক্ষীরা ও পারুলিয়া অবস্থান নেয়। এই যুদ্ধে যুদ্ধবন্দী হিসাবে ৪ জন পাক সেনা আহত অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ধরা পড়ে।

৩০ আগষ্ট ১৯৭১: উকশা- গোবিন্দপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের শক্ত ঘাটিতে ৪০০ পাকসেনা অতর্কিত আক্রমন চালালে উভয় পক্ষের তুমুল যুদ্ধ হয়। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দীর্ঘ ৯ ঘন্টা যুদ্ধ চলে। এই যুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধারা শত্রæসেনাদের পরাজিত করে এলাকা তেকে তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হন। মুক্তিযোদ্ধাদের সীমান্তে পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে ৮ জন পাকসেনা প্রাণ হারায়। পরে জানা যায় পাক মেজর গুরুতর আহত হলে তারা যুদ্ধ ফেলে পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধাদের ফাঁদে পড়ে খানসেনারা জীবন দেয় বলে ঘটনাটি উকশার মরণ ফাঁদ নামে পরিচিতি।

৪ সেপ্টেম্বর ১৯৭১: পিরোজপুর গ্রামে গড়ে ওঠা মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি আক্রমণ করতে আসা পাকবাহিনীর প্রচন্ড যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে বহু পাকসেনা ও রাজাকার মারা পড়ে।

২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭১: সাব-সেক্টর কমান্ডার লে. মাহফুজ আলম বেগ ও কমান্ডার শেখ ওয়াহেদুজ্জামানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা কালিগঞ্জ রাজাকার ক্যা¤প আক্রমণ করে তাদেরকে আত্মসর্মাপনে বাধ্য করে। একই দিনে কালিগঞ্জ বাজারে অবস্থিত ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের কালিগঞ্জ শাখা (বর্তমান সোনালী ব্যাংক) অপারেশন করে ব্যাংকের বেশ কয়েকটি বন্দুক হস্তগত করে।

২৯ সেপ্টম্বর ১৯৭১ : পাক বাহিনী দুললী মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প আক্রমন করে তাদের নিশ্চিন্ন করা জন্য অগ্রসর হয়। এই খবর মুক্তিযোদ্ধাদের গয়েন্দারা মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে পৌঁচ্ছে দেয়। পাক সেনাদের আক্রমনে মুক্তি যোদ্ধারা ভারি অস্ত্রের কাছে পেরে উঠতে না পেরে এই যুদ্ধের অধিনায়ক শেখ ওহেদুজ্জামান তার সহযোদ্ধাদের নিরাপদে স্থান ত্যাগ করতে নির্দেশ দেন। তা না হলে হয়ত অনেক মুক্তিযোদ্ধা এই দিন শহীদ হতেন। মুক্তিযুদ্ধা রজব আলীর মাথায় আঘাত লাগায় তিনি গুরুত্বর আহত হয়েছিলেন।

২০ নভেম্বর ১৯৭১: কালিগঞ্জ ওয়াপদা কলোনিতে অবস্থানরত পাকবাহিনী পশ্চিমা রেঞ্জার ও কিছু রাজাকারদের ওপর মুক্তিযোদ্ধারা ভোর ৫ টায় আক্রমণ করলে প্রচন্ড যুদ্ধ হয়। ভোর ৫ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত যুদ্ধে পাকবাহিনী পিছু হটে তবে বেশ কিছু পাকসেনা মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে বন্দী হয়। এই ২ ঘন্টার সংঘষে মুক্তিযোদ্ধাদের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি তবে খান সেনারা তাদের যথেষ্ট জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি হয় তারা সবি গোপন রাখে। এই যুদ্ধে ৪০ জন পাকসেনা মুক্তিবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে। তার মধ্যে লে. আহসানউল্লাহ ২২ জন ও নায়েক সুবেদার গফুর ৬ জন খানসেনা বন্দী করেন। বাকী খান সেনারা কালিগঞ্জ থেকে পালিয়ে আলিপুর ও সাতক্ষীরার পুস্পকাটি নামক স্থানে শক্তিশালী ঘাটি করে। ফলে শত্রæ মুক্ত হয় কালিগঞ্জ এই খবর মুহূত্বের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে কালিগঞ্জের গ্রামে গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা ও সর্বস্তরের মানুষ জয় বাংলা মিছিলে মুখরিত করে কালিগঞ্জের রাস্তায় রাস্তায় সবাই মিলে কালিগঞ্জের ডাকবাংলা চত্তরের বকুল তলায় উত্তোলন করা হলো স্বাধীন বাংলার পতাকা। এই শুভক্ষণ আনন্দ মিশ্রিত অশ্রæসজাল মুহুত্ব আজও ভোলার নয়। কালিগঞ্জবাসী যা হারিয়েছে তার চেয়ে পেয়েছে অনেক কিছু স্বাধীনতার আনন্দ। এই দিনটি কালিগঞ্জ বিজয় দিবস হিসেবে পালিত হয় এটি সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ মুক্ত দিবস হিসাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্মরণীয় থাকবে আজীবন।

লেখক: সাংবাদিক, স্টেশন ম্যানেজার, রেডিও নলতা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here