• নাফ নদীর ঐ পাড়ে মিয়ানমার

মিয়ানমারের স্বাধীনতা দিবসে রাখাইনে বৌদ্ধ বিদ্রোহীরা চারটি পুলিশ পোস্টে হামলা চালিয়েছে। শুক্রবার ভোরের এ হামলায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সাত সদস্য নিহত হয়েছে। সামরিক বাহিনৗ ও সশস্ত্র বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে এ খবরটি নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এএফপি।

পশ্চিমাঞ্চলীয় এ রাজ্যটিতে গত ডিসেম্বর থেকেই আরাকান আর্মি ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ জোরদার হতে থাকলে নতুন করে সহিংসতা শুরু হয়।

২০১৭ সালে এই রাখাইনে ভয়াবহ সেনা অভিযানের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছিলো।

জাতিসংঘ বলছে আরাকান আর্মির সাথে সাম্প্রতিক লড়াইয়ের জের ধরে আরও আড়াই হাজার বেসামরিক নাগরিককে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছে।

আরাকান আর্মির মুখপাত্র খিন থু খা রয়টার্সকে বলেছেন তারা চারটি পুলিশ পোস্টে হামলা চালিয়েছে ও পরে সাতটি ‘শত্রু’ মৃতদেহ ছিনিয়ে নেয়।

তারা নিরাপত্তা বাহিনীর আরও বার জনকে আটক করেছে বলে দাবি করেন তিনি। “তাদের বিষয়ে আমরা আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করবো। তাদের কোনো ক্ষতি করবোনা”।

রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে

তিনি বলেন, “মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গত কয়েক সপ্তাহে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে যে হামলা চালিয়েছে তার জবাবেই এ হামলা চালানো হয়েছে”।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী গত মাসেই দেশটির উত্তর ও উত্তর পূর্বাঞ্চলে বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপের সাথ শান্তি আলোচনা শুরুর জন্য চার মাস লড়াই বন্ধের কথা জানিয়েছিলো।

যদিও রাখাইন এর আওতায় ছিলোনা। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম মঙ্গলবারেও একই গোষ্ঠীর হাতে আরেকটি হামলার খবর দিয়েছিলো। সেনা মুখপাত্র ঝাও মিন তুন রয়টার্সকে বলেছেন শুক্রবারের হামলার জবাব দিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।

যে চারটি পুলিশ পোস্টে হামলা হয়েছে সেগুলো বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া। তিনি বলেন নিরাপত্তার স্বার্থে ওই অঞ্চলে সেনা অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে কতজন এবারের হামলায় নিহত হয়েছে সে সম্পর্কে তিনি কিছু বলতে রাজী হননি।

তিনি বলেন ওই এলাকায় বৌদ্ধ নৃ গোষ্ঠীরা বসবাস করে এবং তারা মিয়ানমারের নাগরিক। এরা রাখাইনে থাকলেও রোহিঙ্গা নয় বলে নিশ্চিত করেন তিনি। ঝাও মিন তুন বলেন ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের ৭১বছর পূর্তিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের কয়েক মিনিট পর থেকেই হামলা শুরু হয়।

অং সান সু চি
যদিও আরাকান আর্মির খিন থু খা স্বাধীনতা দিবসের সাথে এই হামলার সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন।

“আমরা এখনো স্বাধীন নই। এটা আমাদের স্বাধীনতা দিবস নয়,” রাখাইনে বৈষম্যের কথা উল্লেখ করে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ওদিকে এএফপি জানায় আরাকান আর্মি রাখাইনে বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসন চাইছে।

তাদের অভিযোগ পুলিশ পোস্টগুলোকে সামরিক বাহিনী আর্টিলারি হিসেবে ব্যবহার করছে।

“দু সপ্তাহ আগে সেনাবাহিনী পুলিশকে যুদ্ধের মধ্যে নিয়ে আসে এবং সারাদিন ধরে সামরিক হেলিকপ্টার থেকে গুলি বর্ষণ হয়েছে”।

এদিকে সম্প্রতি যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে সেটি সামরিক বাহিনী একতরফা ভাবেই করেছে।

আরাকান আর্মির দাবি রাখাইনের শক্তি বৃদ্ধির জন্যই এটি করেছে সেনাবাহিনী।

যদি পর্যবেক্ষকরা নতুন করে সেনা মোতায়েনের আর কোন ইঙ্গিত পাননি বলে জানাচ্ছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here