নিউজ বাংলা ডেস্ক: আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবস। ১৯৯৫ সাল থেকে প্রতি বছর ৫ সেপ্টেম্বর তারিখ বিশ্ব ব্যাপী পালিত হয়ে থাকে বিশ্ব শিক্ষক দিবস। এই দিবসটি শিক্ষকদের অবদানকে স্মরণ করার জন্য পালন করা হয়।

এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় হলো-“শিক্ষার অধিকার অর্থ একজন যোগ্য শিক্ষকের অধিকার।”

ইউনেস্কোর মতে, বিশ্ব শিক্ষক দিবস শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ পালন করা হয়।

বিশ্বের ১০০টি দেশে এই দিবসটি পালিত হয়ে থাকে। এই দিবসটি পালনে এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল (Education International – EI) ও তার সহযোগী ৪০১টি সদস্য সংগঠন মূল ভূমিকা রাখে। দিবসটি উপলক্ষে ইআই প্রতি বছর একটি প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করে থাকে যা জনসচেতনতা বৃদ্ধির সাথে সাথে শিক্ষকতা পেশার অবদানকেও স্মরণ করিয়ে দেয়।

দিবসটি পালনের জন্য সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করবে।

ভারতের মহান শিক্ষক সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণ’র জন্মদিনকে (৫ সেপ্টেম্বর) শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। তিনি ছিলেন স্বাধীন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ।আজ ৫ই সেপ্টেম্বর, ভারতে শিক্ষক দিবসরূপে পালিত হচ্ছে।

একজন আদর্শ শিক্ষক ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ [৫ই সেপ্টেম্বর, ১৮৮৮ – ১৭ই এপ্রিল, ১৯৭৫] আজকের দিনে তামিলনাডুর তিরুট্টানিতে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

একাধারে রাজনীতিবিদ, দার্শনিক ও অধ্যাপক এই শান্ত মানুষটি ছাত্রজীবনে অতি মেধাবী ছিলেন। জীবনে কোন পরীক্ষায় দ্বিতীয় হননি। বিভিন্ন বৃত্তির মাধ্যমে তার ছাত্র জীবন এগিয়ে চলে। ১৯০৫ সালে তিনি মাদ্রাজ খ্রিস্টান কলেজ থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তার বিষয়টি ছিল ‘বেদান্ত দর্শনের বিমূর্ত পূর্বকল্পনা’(The Ethics of the Vedanta and its Metaphysical Presuppositions)।

বিশ্বের দরবারে তিনি অতি জনপ্রিয় দার্শনিক অধ্যাপক হিসাবেও পরিচিত ছিলেন। ১৯৩১ সালে তাঁকে British knighthood-এ সম্মানিত করা হয়। ১৯৫৪তে ভারতরত্ন উপাধি পান।

প্রথম জীবনে তিনি মাইসোর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা করেন (১৯১৮)। এসময় তিনি বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য পত্রিকায় লিখতেন। সে সময়েই তিনি লেখেন তাঁর প্রথম গ্রন্থ ‘The Philosophy of Rabindranath Tagore’। দ্বিতীয় গ্রন্থ ‘The Reign of Religion in Contemporary Philosophy’প্রকাশিত হয় ১৯২০সালে। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েও অধ্যাপনা করেন। দেশ–বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বারবার অধ্যাপনার জন্য আমন্ত্রিত হয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তার গুণমুগ্ধ ছাত্র ও বন্ধুরা তাঁর জন্মদিন পালন করতে চাইলে তিনি বলেন ‘জন্মদিনের পরিবর্তে ৫ই সেপ্টেম্বর যদি শিক্ষক দিবস উদ্‌যাপিত হয় তবে আমি বিশেষরূপে অনুগ্রহ লাভ করবো।’

তিনি science নিএ পরতে খুবি আগ্রহি ছিলেন কিন্তু দারিদ্র্যতার জন্য পরতে পারেননি।

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পেশাজীবন কেবল একটি চাকরির ক্ষেত্রে সীমিত হলেও, একজনের জীবনে শিক্ষকদের গুরুত্ব সমানভাবে অপরিহার্য। এখানে যেসব মানুষ তাদের শিক্ষকদের উদযাপন এবং তাদের অবদান জন্য তাদেরকে সম্মান প্রদর্শন করেছিলেন সেসব মানুষের কাছ থেকে পাওয়া কিছু অনুপ্রেরণীয় উদ্ধৃতি উল্লেখ করা হয়েছে।

* একটি শিশুকে শিক্ষিত করে তোলা একটি বড় কাজ- এবং সঠিকভাবে বলতে গেলে, একটি রাষ্ট্র শাসনের চেয়েও বড় কাজ।- উইলিয়াম এলারারি চ্যানিং, প্রচারক এবং ধর্মতত্ত্ববিদ

* বেশিরভাগ লোককে বড়জোর ৫ থেকে ৬ জনের বেশি স্মরণ করে না, কিন্তু একজন শিক্ষককে হাজার হাজার মানুষ আজীবন স্মরণ করে।- এ্যান্ডি রনি, সাংবাদিক

* ব্রিলিয়ান্ট শিক্ষকদের প্রতি লোকেরা সম্মানের দৃষ্টিতে তাকায়, কিন্তু কৃতজ্ঞতার দৃষ্টিতে তাকায় তাদের প্রতি, যারা আমাদের মানবিক অনুভূতিকে স্পর্শ করে। পাঠ্যক্রমটি নিতান্তই প্রয়োজনীয় কাঁচামাল, কিন্তু আন্তরিকতা একটি ক্রমবর্ধমান উদ্ভিদ এবং একটি শিশুর আত্মার জন্য আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।- কার্ল জং, সুইস মনোবিজ্ঞানী

* আপনি যদি কাউকে পছন্দের তালিকায় রাখতে চান, তাহলে শিক্ষকদের রাখুন,  তারা সমাজের নায়ক।-গাই কাওয়াসাকি, সিলিকন-উপত্যকা ভিত্তিক একজন লেখক, স্পিকার, উদ্যোক্তা এবং ধর্মপ্রচারক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here