নিউজ বাংলা ডেস্ক:

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমাদের মধ্যে অনেক সময় দেখি একটা হতাশা, কিন্তু কেন, কী হয়েছে? এই নির্বাচনের ফলাফল তারা নিয়ে গেছে, এই জন্য কি আমরা পরাজিত হয়ে গেছি? মোটেই না, আমরা জগগণের অধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছি। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা অপ্রতিরোধ্য আন্দোলন গড়ে তুলব। যার মাধ্যমে বুকের ওপর বসে থাক এই পাথর সরকার সরাবো।’ শনিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে কল্যাণ পার্টির চতুর্থ জাতীয় কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ক্ষমতায় ঠিকে আছে শুধুমাত্র বন্দুকের নলের জোরে। তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে সম্পূর্ণ করায়ত্ত করে জোর করে ক্ষমতায় আছে। জোর করে ক্ষমতায় বেশি দিন টিকে থাকা যায় না। সাময়িক সময়ের জন্য থাকা যায়, বিশ্বের ইতিহাস তাই বলে।’

বিএনপি কখনও চক্রান্ত করে ক্ষমতায় আসেনি বলে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রায় বলে- বিএনপি চক্রান্ত করে ক্ষমতায় আসে। বিএনপি কোনো দিন চক্রান্ত করে ক্ষমতায় আসেনি। বিএনপি প্রতিবার জনগণের সুষ্ঠু ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। কখনও পেছনের দরজা বা অসুস্থভাবে ক্ষমতায় আসেনি।

‘বিএনপির কারও বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়নি’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এদেশের মানুষ সবাই জানে বিএনপি নেতাদের ও খালেদা জিয়াকে যে মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে। সেগুলো মিথ্যা মামলা না কি সত্য মামলা।’

তিনি বলেন, ‘গত বছর হাতিরঝিলে আমরা স্থায়ী কমিটির নেতারা বসে নাশকতার চক্রান্ত করেছিলাম। এটা যখন দেশের রাজা পুলিশ জানতে পেরে সেখানে রেট করতে গেলও তাদেরকে বোমা মেরে চলে গেলাম। এটাই হচ্ছে প্রথম গায়েবি মামলা। এই মামলার রেশ ধরে গোটা দেশে প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার মামলা হয়েছে। যার কোনো ভিত্তিই নেই।’

বিএনপি মাহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আমরা যখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপ করেছিলাম। তখন তিনি বলেছিলেন- আপনারা গায়েবি মামলাগুলোর তালিকা দেন। এসব মামলায় কাউকে গ্রেফতার করা হবে না। কিন্তু দেখা গেলেও ওইসব মামলা দিয়ে নির্বাচন জয় করে নিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের কয়েকদিন আগে থেকে নতুন আরেকটি পরিকল্পনা করে সরকার। তা হলো- কয়েকটা কাপড় দিয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিস করে, সন্ধ্যায় তারাই আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। আর পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের আটক করে, বাড়ি ছাড়া করে নির্বাচন করে নিয়েছিল। আর এখন প্রধানমন্ত্রী বলছেন, আমাদের বিরুদ্ধে কোনো মিথ্যা মামলা হয়নি।

খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি এখন চলতে পারেন না, কিছু খেতে পারেন না। আমরা বারবার দাবি জানিয়েছি- তাকে বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার জন্য। কিন্তু সরকার তাকে পিজি (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে নিয়ে গেছে। আমরা মনে করি না সেখানে তার সঠিক চিকিৎসা হবে।

২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে বিএনপির মধ্যে কোনো সমস্যা নেই বলেও দাবি করেন তিনি।

এদিকে কল্যাণ পার্টির চতুর্থ জাতীয় কাউন্সিলে আবারও চেয়ারম্যান হিসেবে মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম এবং মহাসচিব হিসেবে এমএম আমিনুর রহমান নির্বাচিত হয়েছেন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের আরও মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here