হুমায়ুন কবির সোহাগ, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :

 

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার,নার্স,ওয়ার্ডবয়সহ ১২ জন আক্রান্ত হয়েছেন।করণা সহ সকল রোগীদের চিকিৎসা দিতে হাসপাতালের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা রীতিমতো হিমসিম খাচ্ছেন। বর্তমানে কোভিড-১৯ এর সংকট আবার প্রকট আকার ধারণ করায় সংক্রমণ রোধে দেশব্যাপী সরকার কর্তৃক সর্বাত্মক লকডাউন দেওয়া হয়েছে।অন্যান্য হাসপাতালের ন্যায় কালীগঞ্জ হাসপাতালেও বেড়েছে সব ধরনের রোগীর চাপ। তবে কালীগঞ্জ হাসপাতালে নেই পর্যাপ্ত সংখ্যক ডাক্তার ও নার্স। আবার কর্মরতদের মধ্যে অনেকের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে করোনা রোগিদের সেবা দেওয়ার জন্য। যে কারনে এ হাসপাতালে করোনা রোগিদের চিকিৎসা দিতে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আরএমও ডা : আহসান হাবিব জিকো জানান,কালীগঞ্জ হাসপাতালে করোনা রোগিদের জন্য রাখা হয়েছে ১৭টি বেড। রোগি বৃদ্ধি হলে বেড বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
কালীগঞ্জ হাসপাতালে বর্তমানে ১ জন ডাক্তার,৫ জন নার্স, ১জন ওয়ার্ডবয়, টিকিটম্যান ১জন, ফার্মাাসিষ্ট ১ জন, প্যাথোলোজিষ্ট ১ জন, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তারা প্রত্যেকেই হোম আইসোলেশন এর মাধ্যমে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সাধারন বহিরাগত করোনা রোগি রয়েছেন ১১ জন ভর্তি। এ হাসপাতালে অন্তত ২৫ জন ডাক্তারের প্রয়োজন রয়েছে, সেখানে কর্মরত রয়েছেন ১১ জন। দু, জন ডাক্তার কে খুলনা মেডিকেলে ডেপুটেশনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ১১ জন ডাক্তার দুই ভাগে দায়িত্ব পালন করছেন। আবার সকাল, সন্ধ্যা ও রাতের শিফটে ভাগ হয়ে প্রতিদিন কাজ করেন, তারা কোন ভাবেই বিরাম পাচ্ছেন না। হাসপাতালে এখন ও ১২ জন নার্স প্রয়োজন রয়েছে, বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ১৩ জন। ৪ জনকে ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে করোনা রোগির সেবা প্রদানের জন্য। ১৩ জন নার্সের মধ্যে ৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। কালীগঞ্জ হাসপাতালে ক্রমবর্ধমান করোনা রোগীর চাপ রয়েছে, প্রতিদিন রোগির চাপ বাড়ছে আবার বেশি গুরুতর হলে যশোর, খুলনাতে পাঠানো হচ্ছে উন্নত চিকিৎসার জন্য।হলে কর্তব্যরত ডাক্তার এবং স্টাফদের কর্মঘন্টা বাড়ছে।


কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার শামিমা শিরিন লুবনা জানান, ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ডবয়সহ জনবল সংকট থাকার কারনে করোনার চিকিৎসা দেওয়া খুবই কষ্ট হয়ে পড়ছে। ইতিমধ্যে ডাক্তার, নার্সদের খুলনা ও ঝিনাইদহে ডেপুটেশনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফলে জনবল সংকট হয়ে পড়েছে। হাসপাতালে অনেক পদ শূন্য রয়েছে। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালের প্রয়োজনীয় জনবল নেই। আমরা বিদ্যমান জনবল দিয়ে রোস্টার অনুযায়ী কাজ করছি এবং রোগীদের চিকিৎসা নিতে উৎসাহিত করছি। হাসপাতালের কর্মরত ডাক্তার মাজহারুল ইসলাম করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন নিজ বাসায়।এদিকে ডাক্তার মাজহারুল ইসলাম ও তার স্ত্রী ঝিনাইদহ কারাগারের ডাক্তার হিসাবে কর্মরত থাকা অবস্থায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং তার শিশু সন্তানও আক্রান্ত হয়েছে। তবুও আমরা সাধ্যমতো রোগীদের সেবা দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

কালীগঞ্জ উপজেলার প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষের জন্য এ উপজেলার একমাত্র সরকারি হাসপাতালটিতে সারা বছরই রোগী ভর্তি থাকে। আবার অনেকের মধ্যে করোনা নিয়ে চলছে অজানা এক আতঙ্ক। কালীগঞ্জে একমাত্র সরকারি হাসপাতালে রোগী ভর্তি সব সময় বেশি থাকে। সারা দিনেই ঠান্ডা-কাশির সাধারণ রোগীরা আসছেন। তাদের ব্যবস্থাপত্র দেয়ার পাশাপাশি করোনা সংক্রান্ত নিয়মকানুন মেনে চলতে এবং আতঙ্কিত না হওয়ার সাহস দিচ্ছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here