নিউজবাংলা ডেস্ক:
সেমিফাইনালের হিসেবটা তাহলে মিলেই গেল! লাইপজিগ ও লিঁও কাগজে-কলমে ছিল অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল। তাদের হারিয়ে ফাইনালে উঠল পিএসজি ও বায়ার্ন মিউনিখ। দুই বড় দল ফাইনালে ওঠায় লিসবনে তাহলে দুর্দান্ত এক ম্যাচই হতে যাচ্ছে?
হিসেব-নিকেষ কষাও নিশ্চয়ই এর মধ্যেই শুরু হয়েছে। পিএসজির আক্রমণভাগকে অনেকেই বায়ার্নের চেয়ে এগিয়ে রাখছেন। নেইমার ও কিলিয়ান এমবাপ্পেকে বায়ার্নের রবার্ট লেভানডফস্কি ও সার্জি নাবির চেয়ে এগিয়ে রাখা হচ্ছে। তারকা ইমেজ বিচারে পিএসজির দুই ফরোয়ার্ড অবশ্য লেভা ও নাব্রির চেয়ে এগিয়ে। কিন্তু গোলের হিসেবে? ফাইনালের আগ পর্যন্ত নেইমার ও এমবাপ্পে মিলে করেছেন ৮ গোল। নেইমারের কাছ থেকে এসেছে ৩ গোল, এমবাপ্পের নামের পাশে ৫ গোল। পিএসজির ফাইনালে ওঠায় এ দুই তারকার অবদান ও পারফরম্যান্স মোটেই ফেলনা নয়।
শুধু কি নেইমার-এমবাপ্পের চেয়ে বেশি? না, পরিসংখ্যান জানাচ্ছে গোল করায় চ্যাম্পিয়নস লিগে অধিকাংশ দলকেই ছাপিয়ে গেছেন লেভা-নাব্রি। কাল লিঁও-বায়ার্ন ম্যাচের আগে দুজনের গোলসংখ্যা ছিল ২১। বাঁ প্রান্ত দিয়ে দুই খেলোয়াড়কে কাটিয়ে নাব্রির দুর্দান্ত লক্ষ্যভেদ গোলের খাতা খুলেছে ম্যাচের। এর মধ্য দিয়ে এ মৌসুমে নিজেদের ৪০তম গোল পেয়ে যায় বায়ার্ন। পরে দলকে আরও দুই গোল এনে দেন নাব্রি-লেভা। সব মিলিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের এ মৌসুমে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৪২ গোল করল বায়ার্ন। গোলসংখ্যায় তাদের ধারে-কাছে নেই আর কোনো দল।
এবার আসা যাক লেভা-নাব্রির প্রসঙ্গে। চ্যাম্পিয়নস লিগে এবার দলগুলোর সর্বোচ্চ গোলের পরিসংখ্যান সাজালে বেরিয়ে আসে চমকপ্রদ এক তথ্য। বায়ার্নের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোল পিএসজির (২৫)। তৃতীয় সর্বোচ্চ গোল কোনো দলের নয়, লেভা-নাব্রির (২৪)। কাল নাব্রি করেছেন জোড়া গোল, এক গোল লেভানডফস্কির। গোলসংখ্যায় কাল ম্যানচেস্টার সিটিকে চারে নামিয়ে তিনে উঠে আসেন দুই তারকা।
এর মধ্য দিয়ে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও গ্যারেথ বেলের গড়া একটি মাইলফলকও টপকে গেলেন নাব্রি-লেভা। ২০১৩-১৪ মৌসুমে জুটি বেঁধে ২৩ গোল করেছিলেন রোনালদো-বেল। সেবার রেকর্ড ১৭ গোল করেছিলেন রোনালদো, ৬ গোল বেলের। তাদের সেই মাইলফলক এবার নতুন করে গড়লেন বায়ার্নের দুই তারকা। তাতে বায়ার্ন উঠে এসেছে পরিসংখ্যানের দারুণ এক পাতায়। চ্যাম্পিয়নস লিগে এক মৌসুমে ন্যূনতম ৪০ গোল করা দলগুলোর ক্লাবে এখন বায়ার্ন। চতুর্থ দল হিসেবে এ তালিকায় যোগ দিল জার্মান দলটি (৪২ গোল)। ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে ৪৫ গোল করেছিল বার্সেলোনা। ২০১৩-১৪ মৌসুমে ৪১ গোল রিয়ালের, ২০১৭-১৮ মৌসুমে তাদের সমান গোল করেছিল লিভারপুল।
সে যাই হোক, রোববার বায়ার্নের বিপক্ষে ফাইনালে পিএসজি রক্ষণভাগের ছক যে এ দুই তারকাকে ঘিরেই কষা হবে তা বলাই বাহুল্য। এদিকে লেভা-নাব্রির সামনেও থাকবে দারুণ এক লক্ষ্য। সর্বোচ্চ গোল করার দৌড়ে লেভা-নাব্রির সামনে এখন শুধু পিএসজি, আর ফাইনালে এই দলেরই মুখোমুখি হবেন তাঁরা। ব্যবধানও মাত্র ১ গোলের।এর বেশি গোল করলে পেছনে পড়বে পিএসজি, দুইয়ে উঠে আসবেন লেভা-নাব্রি আর শীর্ষে বায়ার্ন। তখন তালিকাটা দেখলে নিশ্চয়ই মন জুড়িয়ে যাবে বায়ার্ন সমর্থকদের।
তবে ভুলে গেলে চলবে না পিএসজির রক্ষণভাগও কিন্তু বসে থাকবে না।