কামাল ইয়াসীন ,রাজশাহী

শহীদদের প্রতি কতটা শ্রদ্ধা থাকলে নিজের জীবনের সঞ্চিত টাকা তাদের স্মৃতির উদ্যেশ্যে ব্যয় করা যায় তারই দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন রাজশাহীর আরিফ। তিনি মোহনপুর উপজেলার রায়ঘাটি ইউনিয়নের হাটরা গ্রামের শামসুদ্দিন মৃধার ছেলে। হাটরা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নিজের সঞ্চিত অর্থ ব্যয়ে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করে দিয়েছেন।

হাটরা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও ওই স্কুলে কোনো শহীদ মিনার ছিলনা। মোহনপুর উপজেলা সদর থেকে হাটরা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুরুত্ব ১১ কি.মি. দূরে অবস্থিত গত সোমবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় স্কুলের ভবন ঘেঁষে নির্মাণ করা হয়েছে শহীদ মিনারটি। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরাসহ স্থানীয়রা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন । শিক্ষার্থীরাও আনন্দিত । কারন এই প্রথমবারের মতো নিজেদের স্কুলেই শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পন করতে পারবে ভাষা শহীদদের স্বরণে।প্রধান শিক্ষক জানান, তরুন যুবক আরিফ বেশ কিছুদিন থেকে বলে আসছিলেন স্কুলে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার থাকলে ভালো হয়। সবাই ভাষা আন্দোলন ও মাতৃভাষার গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারবে। একদিন আরিফ স্কুল প্রাঙ্গণে শহীদ মিনার নির্মাণ করার অনুমতি ও জমি চাইলেন। শিক্ষক ও কমিটির পক্ষ থেকে জমি ও অনুমতি দেওয়া হলো। কিন্তু সবাই জানতে চাইলো তিনি কীভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করবেন? তখন তিনি বললেন, নিজের সঞ্চিত টাকা দিয়ে শহীদ মিনারটি নির্মাণ করে দেন।

আরিফ বলেন, শহীদ মিনারটি নির্মাণে খরচের টাকা দিয়ে আমার বাবা শামশুদ্দিন মৃধা সহযোগিতা করেছেন। এর আগেও আমার বাবা সামাজিক কল্যানে গোরস্থান ও ঈদগাহ নির্মানের জন্য জমি দান করেছেন। এখন থেকে স্কুলের শহীদ মিনারে গিয়ে আরিফ এর কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা এবং স্থানীয়রা প্রাণ খুলে গাইতে পারবেন “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রূয়ারি , আমি কি ভুলিতে পারি”!

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here