নিউজবাংলা ডেস্কঃ আজ পহেলা আগস্ট। শোকাবহ আগস্টের প্রথম দিন। ১৯৭৫ সালের এ মাসেই বাঙালি জাতি হারিয়েছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। শোকের মাসে আওয়ামী লীগ ও দলের অঙ্গসংগঠন মাসব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শোকের মাস আগস্টের প্রথম প্রহরে ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে আলোর মিছিল করে। এর মধ্য দিয়েই আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনসমূহের শোকের মাসের কর্মসূচি শুরু হয়।

আজ থেকেই আগস্ট মাসজুড়ে বাঙালি জাতি স্মরণ করবে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্বাধীনতার স্থপতি মহান এই নেতার প্রতি হৃদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধা নিবেদন করবে বাঙালি জাতি। ঘৃণা, ধিক্কার জানাবে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যাকারী এ দেশীয় দোসর ও একাত্তরে পরাজিত ঘৃণিত শত্রুদের।

যদিও বরাবরের মতো এবারের আগস্টের প্রথম প্রহর তথা গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটেই মোমবাতি প্রজ্বালন, আলোর মিছিল, শপথগ্রহণ ও জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন দল ও সংগঠন শোকের মাসের কর্মসূচি সূচনা করেছে। অবশ্য করোনাভাইরাসের অব্যাহত সংকটের মুখে সব কর্মসূচিই ছিল সংক্ষিপ্ত পরিসরে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে।

আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর মাসব্যাপী কর্মসূচির সূচনাও ঘটেছে আগস্টের প্রথম প্রহরেই। যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু ভবন অভিমুখে আলোর মিছিল, শপথগ্রহণ ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেছে।

বাঙালি জাতির জন্য অত্যন্ত শোকাবহ মাস হচ্ছে আগস্ট। এই আগস্টেই জাতির ইতিহাসের চরমতম শোকবিধুর ও কলঙ্কিত এক অধ্যায়ের সূচনা ঘটেছিল। ১৯৭৫ সালের এই আগস্টের মধ্যভাগে নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বাধীনতার মহান স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সেদিন হাজার বছরের ইতিহাসের এই মহানায়কের বুকের তাজা রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল শ্যামল বাংলার মাটি।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে সপরিবারে জাতির পিতা হত্যার সঙ্গে একাত্তরের পরাজিত শত্রুদের কূট ষড়যন্ত্র আর হামলার শিকার হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের মহান আদর্শ এবং চেতনাও। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ দিয়ে এর বিচারের পথ রুদ্ধ করে আরেক কলঙ্কিত ইতিহাস রচনা করা হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর কলঙ্কিত সেই অধ্যাদেশ বাতিল ও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার শুরু হয়। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া ও নানা কূটকৌশলের জাল ছিন্ন করে ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের চূড়ান্ত রায় ঘোষণা এবং পাঁচ ঘাতকের ফাঁসি কার্যকরের মাধ্যমে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করা হয়েছে। তবে পুরো জাতি এখনও প্রতীক্ষার প্রহর গুনছে বঙ্গবন্ধুর বাকি ছয় পলাতক খুনির ফাঁসি কার্যকরের সেই মাহেন্দ্রক্ষণের।

এই আগস্টেই ঘটেছিল জাতির ইতিহাসের আরও একটি বিয়োগান্তক ঘটনা। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে চালানো হয়েছিল ইতিহাসের ভয়াবহতম গ্রেনেড হামলা। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে চালানো ওই গ্রেনেড হামলা থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও ঝরে গিয়েছিল মহিলা আওয়ামী লীগ নেতা আইভি রহমানসহ ২৪টি তাজা প্রাণ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here